1. admin@netroalap.com : admin :
নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, দর্শনীয় স্থান, খরচ এর বিস্তারিত - নেত্র আলাপ
শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
নেত্রকোনার সকল প্লাস্টিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল ফিজিক্যাল মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল ব্যথা বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল পুষ্টি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল লেজার সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি নেত্রকোনার সকল ইউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চেম্বার, মোবাইল নম্বর এবং রোগী দেখার সময়সূচি

নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, দর্শনীয় স্থান, খরচ এর বিস্তারিত

জুনায়েদ হাসান রানা
  • Update Time : মঙ্গলবার, ৯ জুলাই, ২০২৪
  • ২৯৩ Time View

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি বাংলাদেশ। এদেশের বৃহৎ অংশ জুড়ে আছে হাওর অঞ্চল। এ দেশে হাওরের নাম উচ্চারণ করার সাথে সাথে মনে ভাসে কিশোরগঞ্জ আর সুনামগঞ্জের কথা। অন্যদিকে নেত্রকোণা জেলার নাম বলার সাথে সাথে মাথায় আসে বিরিশিরি, দুর্গাপুর। কিন্তু নেত্রকোনা জেলায় একটি বৃহৎ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত ও নান্দনিক হাওর রয়েছে, সেটি অনেক পর্যটকের কাছেই অজানা। হাওড়-বাঁওড় ও সমতল ভূমির বৈচিত্র্যময় ভূ-প্রকৃতির নেত্রকোনা জেলার প্রাচীন জনপদ মোহনগঞ্জ উপজেলা, যাকে বলা হয় ভাটি বাংলার রাজধানী ও প্রবেশদ্বার। সেই মোহনগঞ্জের পূর্ব অঞ্চলে অবস্থান করছে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য ও নান্দনিকতার প্রতিচ্ছবি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় হাওরগুলোর অন্যতম ডিঙ্গাপোতা হাওর (Dingapota Haor)। মোহনগঞ্জ শহর হতে রিকশা দিয়ে দিঘলাকোনা পর্যন্ত আগালেই চোখে পড়বে সাগর সদৃশ পানির বিস্তৃত প্রান্তর। মনকাড়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর এই ডিঙ্গাপোতা হাওর বাংলাদেশের অন্যতম বড় জলাভূমি এবং দর্শনীয় জায়গা, যেটি আন্তর্জাতিকভাবেও সমাদৃত।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর দৈর্ঘ্যে প্রায় ১২ কিলোমিটার এবং প্রস্থে ৭ কিলোমিটারের উপরে। ডিঙ্গাপোতা হাওরের প্রায় ৯৫ টি বিল প্রত্যেক বছর শীতের সময় নানা প্রজাতির লাখ লাখ পরিযায়ী পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে উঠে। যেদিকে চোখ যাবে, শুধু পানি আর পানি। থৈ থৈ পানিতে এ হাওরের বুকে ভেসে বেড়ানোর মজাই আলাদা। ডিঙ্গাপোতা হাওরের সাথে সংযুক্ত রয়েছে উপজেলার মাগান গ্রাম থেকে বয়ে আসা খাল। যে খালের দুই তীরেও রয়েছে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যের মহিমা। মাঝে মাঝে চোখে পড়বে ভটভট শব্দ করে ডিঙ্গাপোতার বুকে ভেসে বেড়ানো ট্রলার।

 

বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতি আর চিরাচরিত গ্রামীণ জনজীবনের এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি এই হাওর এলাকা। বইয়ের পাতায় পাল তোলা নৌকা কিংবা নৌকায় করে বাজারে যাওয়ার যে দৃশ্য আমরা দেখি, তারই বাস্তব দেখা মিলবে এই ডিঙ্গাপোতা হাওরে। এখানকার গ্রামের লোকেরা হাট বাজারে যেতে নিজ নিজ পাল তোলা নৌকাই ব্যবহার করে। দিন রাত মাছ ধরার অপেক্ষায় ওৎ পেতে থাকা ডিঙ্গাপোতা হাওরের জেলে পরিবারগুলোই যেন জানান দিচ্ছে “মাছে-ভাতে বাঙালি” প্রবাদটির কথা। এই হাওরে খড়া জাল দিয়ে মাছ ধরে জেলেরা জীবিকা নির্বাহ করে। হাওর ভ্রমণের সময় আপনার মনে আনন্দের ঢেউ তুলবে পানিতে দুরন্ত শিশুদের ডিগবাজি, কৃষাণ-কৃষাণীদের হাসি আর দূর থেকে আসা অচেনা পানির কলতান।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর যেমন সৌন্দর্যমণ্ডিত, তেমনি নয়নাভিরাম। এটি কখনও সবুজ, কখনও সাগরের মতো দৃশ্য ধারণ করে।  ডিঙ্গাপোতা হাওড়ের দিগন্ত বিস্তৃত স্বচ্ছ জলরাশি, হাওড়ের মধ্যে দ্বীপের মতো জেগে থাকা গ্রামগুলোর অপরূপ সৌন্দর্য, নৌকা বা ট্রলারে করে প্রকৃতির সৌন্দর্য অবলোকন, সবকিছুই মুগ্ধ করবে আপনাকে। হাওরের পানির ঢেউ আর দুই তীর জুড়ে থাকা সবুজ-সোনালী ধানের মনকাড়া দৃশ্য, মন জুড়িয়ে দিবে যেকোন পর্যটকের। ডিঙ্গাপোতা হাওরের প্রাকৃতিক মনলোভা সৌন্দর্য এভাবেই ভ্রমণপ্রেমীদের হাতছানি দিয়ে ডেকে যায় সবসময়।

 

নয়নাভিরাম এই হাওরের প্রকৃতি তার বৈচিত্র্যময় কারুকাজ দিয়ে ঋতুভেদে দৃষ্টিনন্দন সাজে সজ্জিত হয়ে আকৃষ্ট করে সৌন্দর্যপিপাসুদের। আলাদা আলাদা ঋতুতে আলাদা আলাদা রূপে ডিঙ্গাপোতা হাওরের সৌন্দর্য ফুটে উঠে। শুকনো মৌসুমে যে জায়গায় সবুজের ঢেউ খেলে যায়, বর্ষা মৌসুমে সে জায়গায় চলে জলকেলি। শুকনো মৌসুমে যেখানে সবুজ দিগন্ত, বর্ষা মৌসুমে সেখানে অথৈই জলের ধারা। শুষ্ক মৌসুমে ডিঙ্গাপোতা হাওরে চাষাবাদ করা হলেও বর্ষা মৌসুমে এটি পানিতে টুইটুম্বুর হয়ে ওঠে। বর্ষাকালে দিগন্ত বিস্তৃত পানি, হেমন্তকালে রাশি রাশি সোনালী ধান আর জীব বৈচিত্র্যে পরিপূর্ণ এ হাওরের নয়নাভিরাম মনভোলানো সৌন্দর্য যেকোন ভ্রমণপিপাসুকে মহূর্তেই উদাসী করে তুলবে।

 

বর্ষায় থইথই পানিতে পরিপূর্ণ ডিঙ্গাপোতা হাওরকে মিনি সাগরের মতো মনে হয় আর হাওরের মাঝে জেগে থাকে গ্রামগুলোকে মনে হয় ছোট ছোট দ্বীপের মতো। হাওরের পানির ঢেউ আর বাতাসের শব্দ মন জুড়িয়ে দেয় যেকোন সৌন্দর্যপিপাসু মানুষকে। গাছের ডালের সাথা লাগা পানির চলাৎ চলাৎ শব্দ, বিস্তীর্ণ জলরাশিতে শরীর ভিজানো, আকাশে উড়ে বেড়ানো চিল, স্বচ্ছ পানিতে মাছের লুকোচুরি, মৎস্য শিকারে ব্যস্ত জেলে, সব মিলে বর্ষাকালে হাওরের সৌন্দর্য হাজারগুণ বৃদ্ধি পায়। বর্ষার অথৈ জলে ভাসা হাওরের পানে সকল প্রকৃতিপ্রেমীর মন ছুটে যায় বারবার। শীতের মৌসুমে পরিযায়ী পাখির কলতানে মুখর হয়ে উঠে ডিঙ্গাপোতা হাওরের বিভিন্ন বিল, ঝিল এবং নিচু এলাকা।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরের অথৈ জলরাশির মধ্যে আধডোবা হিজল গাছ নির্বিকচিত্তে দাঁড়িয়ে আছে নিশ্চিন্তমনে। বিশাল দূরের নীল আকাশ যেন হাওরের জলের সাথে মিলে সৃষ্টি করে মনকাড়া দৃশ্য। এ দৃশ্য সৌন্দর্যপ্রেমীদের হাতছানি দিয়ে টানে সবসময়।

বর্ষাকালে এ টান যেন আরো বেড়ে যায়। প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের রূপসুধা আকণ্ঠ পান করতে, শরতের জ্যোস্নায় আলোকিত রাতে চাঁদের আলোর ঝলকানো উপভোগ করতে, সারি সারি হিজল করচ গাছের গলাপানি অবধি ডুবে থাকা সৌন্দর্য দেখতে, অর্ধেক পানির নিচে থাকা হিজল গাছের ছায়ায় শীতল বাতাসে মন জুড়াতে আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর। হাওরের পরিবেশ, প্রকৃতি, হাওর উপকূলের মানুষদের সাধারণ জনজীবন একদম নিকট থেকে অবলোকন করতে এখনই বের হয়ে পড়েন ডিঙ্গাপোতা হাওরের উদ্দেশ্যে। এই হাওরের বিশেষত্ব হলো, এখানে খুব বেশি পর্যটক আসে না। তাই ডিঙ্গাপোতা হাওরের পরিবেশ অনেক বেশি নিরিবিলি এবং ছিমছাম। শহরের কোলাহল ছেড়ে নিরিবিলি পরিবেশে কিছু সময় কাটাতে চাইলে  আর এক দিনের স্বল্প বাজেটে ডে ট্যুর দেওয়ার ইচ্ছা থাকলে, আপনার জন্য বেস্ট অপশন হতে পারে ডিঙ্গাপোতা হাওর।

 

কোথাও নিশ্চিন্তমনে ট্যুর দিতে হলে সে জায়গা সম্পর্কে আগেই বিস্তারিত ইনফরমেশন জানা জরুরী। তাই ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, খাবার, দর্শনীয় স্থান, খরচ জানা না থাকলে নিশ্চিন্তে ট্যুর উপভোগ করা সম্ভব হয়ে উঠে না। এ সমস্যা দূর করতেই পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের সুবিধার্থে আমরা নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, খাবার, দর্শনীয় স্থান, খরচ এখানে উপস্থাপন করেছি। এখন থেকে আর কারো কাছে জিজ্ঞেস করে হয়রান হতে হবে না আপনার। ঘরে বসেই এক ক্লিকে পেয়ে যাবেন নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, খাবার, দর্শনীয় স্থান, খরচ। যেকোনো মূহুর্তে নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, খাবার, দর্শনীয় স্থান, খরচ জানতে ভিজিট করুন (netroalap.com/dingapota-haor-tour) এই লিংকে।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুরে গিয়ে যা যা দেখবেন / মোহনগঞ্জের দর্শনীয় স্থানসমূহ:

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য থাকে হাওরে ট্রলার /  নৌকা দিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে সৌন্দর্য উপভোগ, সাথে হিজল বনের অপরূপ সৌন্দর্য অবলোকন। হাওর ভ্রমণের পাশাপাশি হাওরের কাছেই আরো কিছু দর্শনীয় স্থান আছে, সেগুলোও আপনি এক দিনের মধ্যেই সব ঘুরে দেখতে পারবেন। মোহনগঞ্জের উল্লেখযোগ্য কিছু দর্শনীয় স্থান, যা ট্যুরে গিয়ে দেখবেন:

 

১. ডিঙ্গাপোতা হাওড়ের অপরুপ সৌন্দর্য।

২. হাওড়ের মধ্যে দ্বীপের মত ছোট্ট ছোট্ট গ্রাম গুলি।

৩. হাওড়ের মধ্যে হিজল বন, যাতে পাওয়া যাবে রাতারগুলের ফ্লেভার।

৪. হাওড়ের মাছ ধরার দৃশ্য।

৫. জেলেদের অস্থায়ী আবাসস্থল ও তাদের জীবনচিত্র

৬. শৈলজারঞ্জন সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, বাহাম, মোহনগঞ্জ

৭. আলোকদিয়ার পার্ক, মোহনগঞ্জ

৮. আদর্শনগর পর্যটন কেন্দ্র, মোহনগঞ্জ

৯. মোহনগঞ্জ পৌর শিশু পার্ক

১০. শেখবাড়ি মসজিদ (সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ সময়ের আমলে নির্মিত)

১১. খান বাহাদুর কবির উদ্দিন খান এর দালান বাড়ি

১২. কুলপতাক খ্রিষ্টান বাড়ির ব্রিটিশদের প্রাচীন দুর্গ

১৩. বেথাম গ্রামের প্রাচীন দুর্গ (সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের আমলে নির্মিত)

১৪. দৌলতপুর মন্দির (নির্মিত ৮৭৬ বঙ্গাব্দ)

১৫. রাউৎপাড়া বিষ্ণু মন্দির

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়:

 

বছরের সব ঋতুতেই ডিঙ্গাপোতা হাওর তার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষা করে পর্যটকদের জন্য। প্রতিটি ঋতুতে আলাদা আলাদা রূপে ডিঙ্গাপোতা হাওরের সৌন্দর্য ফুটে ওঠে। বর্ষাকালে হাওরের বিস্তীর্ণ জলরাশি, শুকনো মৌসুমে চারদিকের সবুজময় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভ্রমণপিয়াসীদের মন জয় করে নেয়। সকল ঋতুতেই ডিঙ্গাপোতা হাওরের বিশাল পানির গভীরতম জায়গায় থাকা অর্ধেক ডোবা হিজল বৃক্ষ, জলরাশির উচ্ছল ঢেউ এবং দূর আকাশের মিতালী নজর কাড়ে। বিশেষত হেমন্তকাল এবং শরৎকালে হাওরের দুই তীরের সোনালী সবুজ ধানখেত ও নীলচে আকাশের দিগন্ত বিস্তৃত সৌন্দর্য যে কাউকে আকর্ষণ করবে।

 

বিসিএসসহ সকল চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতির সাজেশন ও টিপস দেখুন এখানে

 

বছরের সব ঋতু এবং সব মাসে ডিঙ্গাপোতা হাওর সুন্দর থাকলেও বর্ষাকালে এর সৌন্দর্য কয়েক কোটি গুণ বেড়ে যায়। বর্ষায় উন্মত্ত যৌবনা ডিঙ্গাপোতা তার চিরাচরিত রূপ পাল্টে ভয়ংকর সুন্দর হয়ে ওঠে। তখন তার রূপ যেন উপচে উপচে পড়ে। তাই টুইটুম্বুর পানিতে পরিপূর্ণ হাওরের সবচেয়ে বেশি সৌন্দর্য, বিস্তীর্ণ জলরাশির খেলা এবং পানিতে ডুবন্ত হিজল বাগানের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে চাইলে, বর্ষাকালই হচ্ছে ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণের শ্রেষ্ঠ সময়।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরে যাওয়ার উপায়:

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণে যেতে হলে, ২ ধাপে সেখানে পৌঁছাতে হবে:

 

প্রথমে ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ

তারপর মোহনগঞ্জ থেকে তেতুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে যাত্রা।

 

⏩ ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ:

 

ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জে দুইভাবে পৌঁছানো যায়। বাসের মাধ্যমে এবং ট্রেনের মাধ্যমে।

 

(১) বাসে চড়ে ঢাকা টু মোহনগঞ্জ:

 

মোহনগঞ্জে যাওয়ার অন্যতম ভালো উপায় হচ্ছে ঢাকার মহাখালী থেকে সরাসরি মোহনগঞ্জের বাসে ভ্রমণ। এতে সময় অনেকটাই কম লাগে। ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে মোহনগঞ্জের উদ্দ্যেশে রাতে এবং দিনে বিভিন্ন পরিবহনের অনেকগুলো বাস চলে। এই বাসগুলো আপনাকে মোহনগঞ্জ শহরে নামিয়ে দিবে। এই বাসগুলোতে সাধারণত ৩০০-৪০০ টাকা ভাড়া নেয়। এই বাসে ৫-৭ ঘন্টার মধ্যেই মোহনগঞ্জ শহরে পৌঁছে যাবেন।

 

ঢাকা টু মোহনগঞ্জের কিছু বাসের মোবাইল নম্বর:

 

ঢাকা টু মোহনগঞ্জ এবং মোহনগঞ্জ টু ঢাকা সকল বাসের কাউন্টার, মোবাইল নম্বর, ভাড়া এবং যাতায়াতের সময়সূচি দেখুন এখানে

 

🔷 জ্যোতি-মিরা এন্টারপ্রাইজ

      মোহনগঞ্জ কাউন্টার – ০১৭১৭২৫৮৬৮৬

      নেত্রকোণা কাউন্টার – ০১৯১১১৫৫৯০৫

🔷 পল্লী মাহী পরিবহন

     মোবাইল নম্বর: ০১৯৭৫৮৯০২২৩, ০১৭৬০৯৬৪৯৫০

 

🔷 মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস

      মোহনগঞ্জ কাউন্টার – ০১৭১৬১১৫৬৬৬

      মহাখালী কাউন্টার – ০১৩০১২৭৩৯৮৫

 

🔷 এন আর সুপার পরিবহন

     মোবাইল নম্বর: ০১৭৬০৮৬৯২১৬, ০২৭৬০৮৬৯২১৩

 

🔷 জনি এন্টারপ্রাইজ

     মোবাইল নম্বর: ০১৭৮৫৩৮৪৮৬৫, ০১৩১৯৪০৯৪৪৩

 

🔷 পুষ্প পরিবহন

     মোবাইল নম্বর: ০১৭৭২২৯৭০৯৬, ০১৯২৩৪৯৬০৬৯

 

🔷 ইকরাম পরিবহন

     মোবাইল নম্বর: ০১৭৯৩০৭২৮৩৭

 

🔷 মোমো মিরা পরিবহন

      মোবাইল নম্বর: ০১৭২৫১০৫৭৫৬

 

অনুরূপভারে ঢাকায় ফেরার সময় মোহনগঞ্জ শহর থেকে এই বাসগুলো ঢাকা মহাখালীর উদ্যেশে যাত্রা করে। রাতে বাসে উঠলে ভোরের মধ্যেই ঢাকায় পৌঁছে যাবেন। এই বাসগুলোতে যাতায়াত করতে আগে থেকে আসা যাওয়ার বুকিং দিয়ে রাখলে ভালো হয়।

 

(২) ট্রেনে চড়ে ঢাকা টু মোহনগঞ্জ:

 

ঢাকা টু মোহনগঞ্জ রুটের বাসগুলো তুলনামূলক নিম্নমানের এবং এদের সার্ভিসও তেমন ভালো না হওয়ায় বেশিরভাগ মানুষই ট্রেনে যাতায়াত করে থাকেন। ঢাকা টু মোহনগঞ্জ ট্রেন যোগাযোগ খুবই ভালো এবং অত্যন্ত আরামদায়ক। প্রতিদিন ঢাকা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের উদ্দ্যেশে দিনে এবং রাতে ৩টি আন্তঃনগর ট্রেন চলাচল করে। ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ ট্রেনের ভাড়া ২২০ টাকা (শোভন চেয়ার)।

 

ঢাকা টু মোহনগঞ্জ সকল ট্রেনের সময়সূচি:

 

🔷 হাওর এক্সপ্রেস

     ঢাকা থেকে ছাড়ে – রাত ১০.১৫ টায়

     মোহনগঞ্জ পৌঁছায় – ভোর ৪ টায়

 

🔷 মহুয়া কমিউটার

      ঢাকা থেকে ছাড়ে – সকাল ৮.৩০ টায়

      মোহনগঞ্জ পৌঁছায় – দুপুর ২.৫০ টায়

 

🔷 মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস

       ঢাকা থেকে ছাড়ে – দুপুর ১.১৫ টায়

       মোহনগঞ্জ পৌঁছায় – সন্ধ্যা ৬.২০ টায়

 

🔴 সাপ্তাহিক ছুটি হিসেবে প্রতি বুধবার হাওর এক্সপ্রেস ট্রেন এবং প্রতি শুক্রবার মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন বন্ধ থাকে।

 

ঢাকা টু মোহনগঞ্জ এবং মোহনগঞ্জ টু ঢাকা এবং ঢাকা টু মোহনগঞ্জ সকল ট্রেনের যাওয়া আসার সময়সূচি

 

বাস কিংবা ট্রেন যেকোন একটি পদ্ধতিতে আপনি ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ শহরে আসবেন। আগের দিন মোহনগঞ্জ এসে রাতে হোটেলে অবস্থান করে পরেরদিন খুব সকালে তেতুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে বের হলে বিকাল নাগাদ হাওরসহ মোহনগঞ্জের সবগুলো দর্শনীয় স্থান সুন্দরভাবে ঘুরে দেখা সম্ভব। আর আপনি যদি হোটেলে রাত্রিযাপন না করেন অর্থাৎ আপনি যদি সারারাত জার্নি করে এসে সকালে হাওরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে চান, তাহলে ঢাকা থেকে রাতের বাস অথবা ট্রেনে যাত্রা করবেন। সকালে মোহনগঞ্জে নেমে হালকা নাস্তা করে আবার তেতুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যাবেন।

 

⏩ মোহনগঞ্জ টু তেতুলিয়া ঘাট:

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরে নৌভ্রমণের জন্য সকাল সকালই তেতুলিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে বের হয়ে যেতে হবে। মোহনগঞ্জ শহর থেকে অটো, লেগুনা অথবা মোটরসাইকেলে করে তেতুলিয়া ঘাটে যেতে হবে। মোহনগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন অথবা বাসস্ট্যান্ড সব জায়গায়ই অটো, লেগুনা, বাইক ভাড়া নিতে পারবেন। মোহনগঞ্জ থেকে তেতুলিয়া ঘাটে যেতে অটো/লেগুনায় ভাড়া পড়বে জনপ্রতি ৩০-৩৫ টাকা। মোটরসাইকেলে ২ জনের জন্য ভাড়া পড়বে ৮০-৯০ টাকা। আসলে ভাড়ার ব্যাপারটা হচ্ছে, যার কাছ থেকে যত রাখতে পারে। ভালোভাবে দরদাম করে, তারপরই যাত্রা শুরু করবেন।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরে নৌকা ভ্রমণ:

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরের একেবারে তীরেই অবস্থিত সুন্দর তেতুলিয়া গ্রাম এবং তেতুলিয়া ঘাট। তেতুলিয়া ঘাট থেকেই শুরু হবে আপনার চরম আকাঙ্ক্ষিত হাওর ভ্রমণ এবং বিশাল জলরাশির সৌন্দর্য অবলোকন। এজন্য আপনাকে একটি ট্রলার / নৌকা কয়েক ঘন্টার জন্য ভাড়া নিতে হবে। এই ট্রলার / নৌকা দিয়ে আপনি সারাদিনব্যাপী পুরো ডিঙ্গাপোতা হাওর ঘুরে বেড়াবেন। নৌকা / ট্রলারের চালকই আপনার ভ্রমণ গাইড হিসেবে কাজ করবে। তেতুলিয়া ঘাটে গেলেই দেখতে পাবেন সারি সারি ট্রলার ও নৌকা। এ ঘাটে ট্রলার এবং নৌকা সবসময়ই থাকে, তাই অগ্রীম বুকিং দেওয়ার কোনো দরকার নাই। সারাদিন ঘোরার জন্য একটি ট্রলার রিজার্ভ নিতে পারবেন সাইজভেদে ৮০০-৩০০০ টাকায়। আবার একটি মাঝারি মানের নৌকা দিয়ে সারাদিন হাওর ভ্রমণ করতে চাইলে খরচ পড়বে ২৫০০-৩০০০ টাকা। মাঝি সকাল ৭ টায় আপনাকে নিয়ে নৌভ্রমণ শুরু করবে এবং পুরো হাওর ঘুরে দেখানোর পর বিকাল ৫ টায় ঘাটে নামিয়ে দিবে।

 

আবার আপনি চাইলে তেতুলিয়া ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে হাওরের বিভিন্ন গ্রামে যেতে পারেন। এই নৌকাগুলোতে ভাড়া নেয় ঘন্টা হিসেবে। তেতুলিয়া ঘাট থেকে ইঞ্জিন চালিত নৌকায় করে হাওরের মাঝখানে অনিন্দ্য সুন্দর ছোট গ্রাম গাগলাজোরে পৌঁছাতে সময় লাগে ৩ ঘন্টা এবং ভাড়া লাগবে ৪০ টাকা। সারাদিনব্যাপী এই গাগলাজোর বাজারে চলে হাওরের বিভিন্ন মাছের সমারোহ। চাইলে এখান থেকে স্বল্প টাকায় হাওরের সুস্বাদু মাছ কিনে নিতে পারেন। গাগলাজোরে হাওরের সৌন্দর্যের পাশাপাশি ধর্মপাশা উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ জেলার তাহেরপুরেট সৌন্দর্যও উপভোগ করতে পারবেন।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরে গিয়ে গ্রুপ করে ফুটবল না খেললে আপনার পুরো ট্যুরই বৃথা। তাই ঢাকা থেকে রওয়ানা করার সময় সাথে  ফুটবল নিতে ভুলবেন না। সারাটা দিন হাওরের জলে ঝাঁপাঝাপি করার পর বিকালে খালি প্রান্তরে গ্রামীণ পরিবেশে ফুটবল খেলার মজাই আলাদা। খেলাধুলার পর্ব সমাপ্ত করে সন্ধ্যায় মোহনগঞ্জ শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।

 

মোহনগঞ্জে কোথায় থাকবেন :

 

মোহনগঞ্জে রাত্রীযাপন করার জন্য বেশকিছু বেসরকারি আবাসিক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। এগুলোতে স্বল্প টাকায় নিরাপদ ও আরামসে রাত কাটিয়ে শরীরের ক্লান্তি দূর করতে পারবেন।

 

মোহনগঞ্জের কয়েকটি সরকারি ও ব্যক্তিমালিকানাধীন আবাসিক হোটেল ও রিসোর্টের ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর:

 

১। হোটেল শাপলা

     স্টেশন রোড, মোহনগঞ্জ

     মোবাইল: ০১৭১২১৩৭৬৫৯

 

২। হোটেল পাঠান

     স্টেশন রোড, মোহনগঞ্জ

     মোবাইল: ০১৯১৬৮৮৮৪৬০

 

৩। আংগুর মিয়া খান হোটেল

     মাঘান বাজার, মোহনগঞ্জ

     মোবাইল: ০১৭৪৪৯২৯৫৪১

 

৪। মোহাম্মদ আলী হোটেল

     মাঘান, মোহনগঞ্জ

     মোবাইল: ০১৭৫৪৬২৫৬৮৯

 

৫। হাওর ইন হোটেল

     স্টেশন রোড, মোহনগঞ্জ

     মোবাইল: ০১৭৪৪১০৭২৭২

 

৬। পান্না গেস্ট হাউজ

     মোহনগঞ্জ

     মোবাইল:

 

৭। পরাগ হোটেল

     মোহনগঞ্জ

     মোবাইল:

 

ব্যক্তি মালিকানাধীন এই বেসরকারি আবাসিক হোটেলগুলোর ভাড়া অনেক কম। রাত্রীযাপন করতে চাইলে ভাড়া পড়বে রুম প্রতি ১০০-১০০০ টাকা।

 

৮। আদর্শনগর পর্যটন কেন্দ্র

     মোহনগঞ্জ

     মোবাইল: ০১৭২১৬৮৩১৮৮

 

সরকারি এই প্রতিষ্ঠানের আবাসন ব্যবস্থা অনেক উন্নত, রয়েছে ভিআইপি সার্ভিস। তাই এখানের খরচও একটু বেশি। এখানে রাত্রীযাপন করতে চাইলে এসি ডিলাক্স কক্ষের ভাড়া পড়বে রুম প্রতি ৪০০০ টাকা, এসি স্ট্যান্ডার্ড রুম ২৫০০ টাকা এবং পিকনিক শেড ১৫০০০ টাকা

 

মোহনগঞ্জের এসব হোটেল কিংবা রিসোর্টে ঢাকা থেকেই ফোন করে বুকিং দিতে পারেন কিংবা এখানে এসেও দামাদামি  করে সরাসরি রুম নিতে পারেন।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুরে কোথায় খাবেন, কী খাবেন:

 

মোহনগঞ্জ শহরে মাঝারি মানের অনেকগুলো খাবারের হোটেল বা রেস্টুরেন্ট রয়েছে, যেগুলোতে ভাত, মাংস, ডালের পাশাপাশি হাওরের বিভিন্ন সুস্বাদু মাছের তরকারি পাওয়া যায়। তৃপ্তি সহকারে খাওয়ার জন্য মোহনগঞ্জ জেবি মার্কেটের পাশে আনন্দ হোটেলে খেতে পারেন। এছাড়া হোটেল হাওর ইনও মোহনগঞ্জের নামকরা খাবার হোটেলগুলোর অন্যতম। আপনি যদি মনে করেন, নৌকায় বসে হাওরের অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য দেখতে দেখতে হাওরের সুস্বাদু মাছ দিয়ে দুপুরের খাবার খাবেন, তাহলে আগে থেকেই আপনার নৌকার মাঝিকে বলে রাখবেন। তখন তারা নিজেরা নৌকায় রান্না করে যথাসময়ে আপনার সামনে খাবার পরিবেশন করবে। চাইলে আপনিও তাদের সাথে রান্নায় অংশগ্রহণ করতে পারেন।

আবার আপনি ট্রলার / নৌকায় উঠার সময় ঘাট থেকেও খাবার নিয়ে যেতে পারেন। এছাড়া হাওর ব্যতীত অন্য দর্শনীয় স্থানগুলো ঘুরতে যাওয়ার সময় হালকা কিছু শুকনো খাবার সাথে রাখতে পারেন। কারণ এখানে যত্রতত্র খাবারের দোকানের দেখা মিলে না। আপনি চাইলে ট্যুর থেকে ফেরার সময় এখান থেকে কম দামে হাওরের বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু তাজ মাছ কিনে নিতে পারেন। আর হাতে সময় থাকলে নেত্রকোনা জেলা শহরে যাত্রাবিরতি করে বিখ্যাত বালিশ মিষ্টি খেতে ভুলবেন না। খাঁটি এবং আসল বালিশ মিষ্টি পাবেন নেত্রকোনা জেলা শহরের বারহাট্টা রোডে অবস্থিত গয়ানাথ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারে।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণে খরচ:

 

ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণে জনপ্রতি কত টাকা খরচ পড়বে, সেটা আসলে নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। প্রত্যেকের বিলাসিতা, খরচ করার প্রবণতা, খাওয়া দাওয়া ও হোটেলের তারতম্য এবং দরদাম করতে পারাসহ আরো অনেককিছুর উপর ভিত্তি করে একেকজনের খরচ একেকরকম হয়ে থাকে। তবে সবকিছুর মিনিমাম একটা  হিসাব ধরে আমরা খরচের একটা খসড়া তুলে ধরছি।

 

ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জ বাস/ট্রেনের ভাড়া ২২০-৪০০ টাকা।

মোহনগঞ্জ থেকে তেতুলিয়া ঘাট অটো/লেগুনা ভাড়া জন প্রতি ৩০ টাকা

সারাদিন ট্রলার ভ্রমণের ভাড়া (ট্রলারের সাইজ অনুযায়ী) ৮০০-৩০০০ টাকা।

থাকার আবাসিক হোটেল ১০০- ১০০০ টাকা।

 

যদি আপনারা ৮-১০ জনের টিম নিয়ে ট্যুর দেন, তাহলে জনপ্রতি ১৫০০-২০০০ টাকার মধ্যেই সব সেরে ফেলতে পারবেন। আর টিমে লোক আরেকটু কম হলে ২০০০-২৫০০ টাকা লাগতে পারে সর্বোচ্চ। তবে সবকিছু নির্ভর করবে আপনার বিলাসিতার ওপর।

 

ডিঙ্গাপোতা হাওরে ট্যুরে গিয়ে হাওর ছাড়াও আরো যেসব দর্শনীয় স্থান দেখবেন, তার বিস্তারিত বিবরণ:

 

১. হিজল বন, পাইকুড়া গ্রাম, মোহনগঞ্জ

হাওরের পরেই মোহনগঞ্জের সবচেয়ে অনিন্দ্য সুন্দর নৈসর্গিক স্থান আখৈলকলা হিজল বন। শুষ্ক মৌসুমে এখানে বিশাল এলাকাজুড়ে জেগে উঠে নয়নাভিরাম হিজল বন। অনেকের কাছে এটি অক্সিজেন পার্ক নামেও পরিচিত। এই বনে রয়েছে সারি সারি হিজল গাছ। হাওরের জলে ভেসে থাকা এই হিজল গাছগুলোকে স্থানীয় অনেক মানুষ ক্রস গাছ নামেও ডাকে। এখানে হিজল গাছের সাথে মিতালি করে আরো দাড়িয়ে আছে করচগাছ এবং বটগাছ। বর্ষা এবং শীত – দুই মৌসুমে হিজল বন দুই রূপে সজ্জিত হয়ে নয়নাভিরাম দৃশ্যের অবতারণা করে।

বর্ষায় হিজল গাছগুলোর প্রায় অর্ধেকাংশ যখন পানির নিচে ডুবন্ত থাকে, তখন ছবির মতো সুন্দর দেখায় জায়গাটিকে। বৃষ্টি হওয়ার পর গাছের সবুজ অগ্রভাগ যখন জলের উপর নিজের অস্তিত্ব জানান দেয়, তখন এই নৈসর্গিক দৃশ্য যেকোন মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে দিবে। অথৈ পানিতে কোন হিজল গাছের ছায়ায় বসে যখন গাছটির শির উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য দেখবেন, তখন অন্যরকম এক ভালোলাগার অনুভূতি ভর করবে আপনার মনে। মোহনগঞ্জের হিজল বন আসলেই মন ভালো করার মতো একটি জায়গা। ছবিতে দেখতে যেমন সুন্দর, সামনাসামনি দেখতে তার চেয়ে বেশি সুন্দর।

 

নেত্রকোনার বিরিশিরি ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, দর্শনীয় স্থান, খরচ এর বিস্তারিত

 

মোহনগঞ্জ শহর থেকে হিজল বাগানের দূরত্ব প্রায় ৯ কিলোমিটার। মোহনগঞ্জ শহরের থানার মোড় বা ব্যাংকার্স মোড় হতে পাইকুরার অটো রিকশায় উঠতে হবে। অটো রিকশা আপনাকে একদম হিজল বাগানের সামনে নিয়ে নামাবে। ভাড়া দিতে হবে জনপ্রতি ৩০-৪০ টাকা। কম সময়ে যেতে চাইলে বাইক ভাড়া করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে মোহনগঞ্জ থানার সামনে হতে হিজল বন যেতে ২০-২৫ মিনিটের মতো লাগবে। ভাড়া নিবে ২ জনের জন্য ১০০-১৫০ টাকা।

 

২. শৈলজারঞ্জন সাংস্কৃতিক একাডেমি , বাহাম, মোহনগঞ্জ

 

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অন্যতম সহচর প্রখ্যাত সংগীতজ্ঞ শৈলজারঞ্জন মজুমদার স্মরণে মোহনগঞ্জে নির্মিত হয়েছে শৈলজারঞ্জন মজুমদার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। মোহনগঞ্জ শহরের বাহাম এলাকায় তার জন্মস্থানে প্রায় ২.৫ একর জমিতে ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই একাডেমি  এবং এর স্মৃতি জাদুঘর অন্যরকম সৌন্দর্য বহন করে। শৈলজারঞ্জন সাংস্কৃতিক একাডেমির মনোরম অডিটরিয়াম ও গ্যালারি মন জয় করে নিবে যেকোন পর্যটকের।

 

৩. জেলেদের অস্থায়ী আবাসস্থল ও তাদের জীবনচিত্র

 

বর্ষাকালে মাছের সিজনে ডিঙ্গাপোতা হাওরে ঘোরার সময় হাওরের তীরে জেলেদের অস্থায়ী আবাসস্থলগুলো চোখে পড়ে। এখানে জেলেরা তাদের পরিবারসহ বসবাস করে। এখানে গিয়ে আপনি জেলেদের পরিবারের সাধারণ ও অকৃত্রিম জীবনযাপন খুব কাছ থেকে দেখতে পারবেন।

 

নৈসর্গিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ডিঙ্গাপোতা হাওর নেত্রকোনা জেলার পর্যটন শিল্পে এক বিরাট সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। অপার সৌন্দর্যের এ হাওরকে কেন্দ্র করে চাইলে গড়ে তোলা যাবে সম্ভাবনাময় এক পর্যটনক্ষেত্র। প্রকৃতি নিজের সবকিছু উজাড় করে এ স্থানটিকে এমনভাবে সাজিয়েছে, যার রূপ দেখতে সারাবছর হাজার হাজার পর্যটক ছুটে আসে নেত্রকোনার পাণে। মোহনগঞ্জের ডিঙ্গাপোতা হাওর তার নয়নাভিরাম সৌন্দর্য নিয়ে অপেক্ষা করছে আপনার জন্য। সব ব্যস্ততা দূরে রেখে নিজের দেহ-মনকে একটু রিফ্রেশ করার জন্য আজই বেরিয়ে পড়ুন ডিঙ্গাপোতার উদ্দেশ্যে।

 

আপনি চাইলে একদিনে ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর শেষ করে এখান থেকেই পরেরদিন আবার টাঙ্গুয়ার হাওর ভ্রমণ করতে পারেন। এক্ষেত্রে মোহনগঞ্জ শহরে এসে পাথর ঘাট হতে ট্রলার ভাড়া করে একদম সরাসরি টাঙ্গুয়ার হাওরে পৌঁছে যেতে পারবেন। টাঙ্গুয়ার হাওর ট্যুর শেষে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকায় ব্যাক করাও অনেক সহজ হবে।

 

হাওরের অঞ্চলের লোকজন অনেক নম্র, ভদ্র, পরোপকারী এবং অতিথিপরায়ণ। আপনার পুরো ডিঙ্গাপোতা ট্যুরে তাদের থেকে অনেক আন্তরিকতা এবং সহযোগিতা পাবেন। তাই তাদের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা আপনার জন্য সমীচীন হবে না। হাওর এলাকার লোকজনের কাছে হাওর হচ্ছে তাদের জীবিকার একমাত্র অবলম্বন। এই ডিঙ্গাপোতা হাওরের জল থেকে তারা মাছ শিকার করে, এই হাওরে গোসল করে, অনেকে এই পানি পানও করে। সুতরাং সেখানে ট্যুরে গিয়ে আপনি এমন কোন নোংরা কাজ করবেন না, যাতে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়ে। যেখানে সেখানে খাবারের প্যাকেট, চিপসের প্যাকেট, পলিথিন বা প্লাস্টিকজাতীয় কিছু ফেলবেন না। আমরা সবাই সচেতন থাকলে এ অনিন্দ্য সুন্দর স্থানটি, তার সৌন্দর্য অটুট রেখে পর্যটকদের জন্য নিজেকে উজাড় করে দিতে পারবে সবসময়।

নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, খাবার, দর্শনীয় স্থান, খরচ সংগ্রহের কাজটি আমরা করছি খুব দ্রুতগতিতে।  উপরোল্লিখিত তালিকায় কোন তথ্যের ঘাটতি থাকলে, সেগুলোর বিস্তারিতও আমরা কিছুদিনের মধ্যেই সংযোজন করবো ইনশাল্লাহ। আপনার জানা নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, খাবার, দর্শনীয় স্থান, খরচ সম্পর্কীয় কোন তথ্য এই লিস্টে না থাকলে, আপনি তা পোস্টের কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন আমাদের। আমরা যথাসম্ভব তা প্রকাশ করতে চেষ্টা করবো।

উপরোল্লিখিত সকল বাস, ট্রেন, অটো, বাইক, নৌকা, ট্রলার আবাসিক হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট, রেস্তোরা কোনোকিছুর সাথেই ‘নেত্র আলাপ’ সংশ্লিষ্ট নয়। ‘নেত্র আলাপ’ শুধুমাত্র পাঠকদের সুবিধার্থে এসব তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশ করে থাকে। আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত কোনোকিছুর দায় ‘নেত্র আলাপ’ গ্রহণ  করবে না।

ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর, ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ, নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর, মোহনগঞ্জ, মোহনগঞ্জ ট্যুর, মোহনগঞ্জ ভ্রমণ, নেত্রকোণা, নেত্রকোনা, ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর প্ল্যান, ডিঙ্গাপোতা হাওর যাতায়াত, ডিঙ্গাপোতা হাওর যাওয়ার উপায়, ডিঙ্গাপোতা হাওর যাবার উপায়, ডিঙ্গাপোতা হাওর বাস, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্রেন, ডিঙ্গাপোতা হাওর কীভাবে যাবো, ডিঙ্গাপোতা হাওর আবাসিক হোটেল, মোহনগঞ্জ রিসোর্ট, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর খরচ, ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ খরচ, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর টাকা, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর গাইডলাইন, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর প্ল্যান, ডিঙ্গাপোতা হাওর সৌন্দর্য, মোহনগঞ্জ ঘোরার জায়গা, নেত্রকোনা ট্যুর, নেত্রকোণা ভ্রমণ, নেত্রকোনা দর্শনীয় স্থান, মোহনগঞ্জ দর্শনীয় স্থান, ডিঙ্গাপোতা হাওর দর্শনীয় স্থান, ডিঙ্গাপোতা হাওরে কী কী দেখবেন, হিজল বন, শৈলজারঞ্জন সাংস্কৃতিক একাডেমি , ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুরের উপযুক্ত মাস, মোহনগঞ্জ বাস ভাড়া মোবাইল নম্বর, মোহনগঞ্জ ট্রেন ভাড়া সময়, ডিঙ্গাপোতা হাওর অটো বাইক মোটর সাইকেল, মোহনগঞ্জ আবাসিক হোটেল ভাড়া, মোহনগঞ্জ রিসোর্ট মোবাইল নম্বর, মোহনগঞ্জ খাবার হোটেল, ডিঙ্গাপোতা হাওর রেস্টুরেন্ট, মোহনগঞ্জ রেস্তোরা, মোহনগঞ্জ বিখ্যাত খাবার, ডিঙ্গাপোতা হাওর, ডিঙ্গাপোতা হাওর, ডিঙ্গাপোতা হাওর কেন বিখ্যাত, ডিঙ্গাপোতা হাওর ছবি, ডিঙ্গাপোতা হাওর কোথায়, ডিঙ্গাপোতা হাওর নেত্রকোনা ভ্রমণ, ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমন তথ্য, ১ দিনের ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর, ডিঙ্গাপোতা হাওর মোহনগঞ্জ, কম খরচে ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমন, নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ, ডিঙ্গাপোতা হাওর নেত্রকোনা, ঢাকা থেকে ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ, কম টাকায় ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ, dingapota haor, mohongonj resort, mohongonj hotel, dingapota haor tour, mohongonj netrokona resort, mohongonj guest house, মোহনগঞ্জ দর্শনীয় স্থান, হিজল বন, ডিঙ্গাপোতা হাওর, ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ, ডিঙ্গাপোতা হাওর ট্যুর, ডিঙ্গাপোতা হাওরের, মোহনগঞ্জ ঘোরার জায়গা, মোহনগঞ্জ বেড়ানোর জায়গা

This Bangla article is about travel guide, tour plan, transportation, hotel, food, sightseeing, cost information of ‘Dingapota Haor’ tourist spot located in Mohongonj upazila of Netrakona district of Bangladesh.

Please Share This Post in Your Social Media

3 thoughts on "নেত্রকোনার ডিঙ্গাপোতা হাওর ভ্রমণ গাইড, ট্যুর প্ল্যান, যাতায়াত, হোটেল, দর্শনীয় স্থান, খরচ এর বিস্তারিত"

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category

© All rights reserved © 2023 নেত্র আলাপ

About Us    Contact us  DMCA / Copyrights Disclaimer   Sitemap  Terms & Conditions  

Privacy Policy

Theme Customized BY WooHostBD